Home ব্যবসা ও শিল্প বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ বিলিয়নের গণ্ডি ভাঙল!!

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ বিলিয়নের গণ্ডি ভাঙল!!

0
GeoBangla_বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন

ঢাকা, ৭ আগস্ট ২০২৫ — বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ২৫ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছুঁয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি আশাব্যঞ্জক ইঙ্গিত। চলতি বছরে এটি দ্বিতীয়বারের মতো এমন ঘটনা ঘটল। রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোর অর্থ ছাড়ই এই অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) জানিয়েছে, গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫.০৫ বিলিয়ন ডলারে, যা এক সপ্তাহ আগের ২৪.৭৭ বিলিয়ন থেকে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক আলাদা পদ্ধতিতে হিসাব করে রিজার্ভের পরিমাণ দেখিয়েছে ৩০.০৭ বিলিয়ন ডলার, যা আগের সপ্তাহে ছিল ২৯.৮০ বিলিয়ন।

এর আগে চলতি বছরের জুন মাসে, দীর্ঘ আড়াই বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ প্রথমবার ২৫ বিলিয়ন অতিক্রম করে। তবে সেই বৃদ্ধি স্থায়ী ছিল না। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (ACU) মাধ্যমে আমদানি পরিশোধের কারণে তা আবার নিচে নেমে আসে। এবার ফের রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
প্রথমত, প্রবাসী আয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসার পর, আরও বেশি সংখ্যক প্রবাসী বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাঠাচ্ছেন। ‘হুন্ডি’ বা অবৈধ উপায়ে টাকা পাঠানোর হার কমে যাওয়ায় সরকারি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা প্রবেশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ঋণ ও অনুদান বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়েছে। IMF, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (ADB) মতো সংস্থাগুলোর আর্থিক সহায়তা সরাসরি রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

রিজার্ভ বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ এখন বিদেশি ঋণ পরিশোধ, আমদানি ব্যয় মেটানো এবং মুদ্রা সংকট মোকাবেলায় আরও প্রস্তুত। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা যেমন বাড়ে, তেমনি সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও জোরদার হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, দেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টস (BoP) বর্তমানে উদ্বৃত্তে রয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশটি ৩.৩ বিলিয়ন ডলারের BoP উদ্বৃত্ত দেখিয়েছে, যেখানে আগের বছর ঘাটতি ছিল ৪.৩ বিলিয়ন ডলার।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে সামনের মাসগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও স্থিতিশীল হতে পারে। তবে তারা এটাও সতর্ক করছেন যে, বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা মাথায় রেখে পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

দীর্ঘমেয়াদে রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে হলে বাংলাদেশকে রপ্তানি বৃদ্ধি ও আমদানি নির্ভরতা কমানোর দিকেও নজর দিতে হবে।

আবারও ২৫ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছুঁতে পারা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। সরকারের নীতিগত পরিবর্তন, বৈশ্বিক সহযোগিতা এবং অবৈধ অর্থ প্রেরণ নিয়ন্ত্রণে নেওয়া পদক্ষেপের সুফল ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version