যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশ বিষয়ে বলা হয়েছে—শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তনের পর সামগ্রিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও কিছু ক্ষেত্রে উদ্বেগ এখনো বিদ্যমান। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং পুলিশ ও তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সংঘর্ষে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এ ঘটনার পর ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করেন। পরে ৮ আগস্ট নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘প্রধান উপদেষ্টা’ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এর পর থেকে মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের সরকারের আমলে নির্বিচারে বা বেআইনি হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় গুরুতর বিধিনিষেধ, সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা ও হুমকি, সেন্সরশিপ, শ্রমিক সংগঠনের স্বাধীনতায় বাধা, শ্রম অধিকারকর্মীদের ওপর সহিংসতা এবং শিশুশ্রমের ভয়াবহ পরিস্থিতি ছিল সুস্পষ্ট।
জুলাই ও আগস্টে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব ইস্যুতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। পাশাপাশি দেশের প্রচলিত বিচারব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অপরাধীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।
বিচারবহির্ভূত হত্যার প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্ববর্তী সরকার ও তাদের এজেন্টরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অসংখ্য তথ্য পাওয়া গেছে। এসব ঘটনার সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি এবং তদন্তও ছিল সীমিত। তবে বর্তমান সরকার অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে এবং দোষীদের বিচারপ্রক্রিয়া চলছে বলে প্রতিবেদনে স্বস্তি প্রকাশ করা হয়েছে।