জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পাঁচ শীর্ষ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে কক্সবাজারে দলীয় রাজনৈতিক পর্ষদকে আগে থেকে জানানো ছাড়া অননুমোদিত সফর করার অভিযোগে। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার্থে তাদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বপ্রণোদিত হয়ে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশ প্রাপ্ত নেতাদের মধ্যে আছেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ এবং দলীয় সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এই নোটিশ বুধবার (৬ আগস্ট) এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দফতর) সালেহ উদ্দীন সিফাত স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠির মাধ্যমে পাঠানো হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট জাতির ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন, জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস। ঠিক এই দিনে দলীয় নীতিমালা অমান্য করে পাঁচ নেতাসহ আরও কয়েকজন কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী সৈকতের ‘সি পার্ল বিচ রিসোর্ট’ হোটেলে ব্যক্তিগত সফরে যান। কিন্তু তারা এই সফর সম্পর্কে দলীয় ‘রাজনৈতিক পর্ষদ’ বা সংশ্লিষ্ট কোনো কমিটিকে পূর্বে অবহিত করেননি বা অনুমতি নেননি।
এই অনানুমোদিত সফর দলীয় শৃঙ্খলা ও নীতির পরিপন্থী হওয়ায়, তাদের এই সিদ্ধান্ত ও সফরের প্রকৃত কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। এ কারণে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব আখতার হোসেনের কাছে আগামী একদিনের মধ্যে সরাসরি উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, গতকাল (৫ আগস্ট) ঢাকায় দলীয় আয়োজনের মধ্যেই এই পাঁচ নেতাসহ মোট ছয়জন কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন। সেখানে তারা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তবে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এসব গুঞ্জন স্পষ্টভাবে অস্বীকার করে বলেন, “আমরা কেবল অবকাশ যাপনের জন্য এখানে এসেছিলাম, কোনো বৈঠক বা আলোচনা হয়নি। হোটেলে চেক-ইন করার পর দেখি এমন খবর, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং গুজব।”
এই ঘটনার ফলে এনসিপির অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর বার্তা পাঠানো হয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়া এমন সফর দলীয় ভাবমূর্তি ও নীতির জন্য ক্ষতিকর এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।