থাইল্যান্ডে দাতব্য অনুদান আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন সুপরিচিত ভিক্ষু লুয়াং ফোর অ্যালংকট। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দেশটির লপবুরি প্রদেশের ওয়াত ফ্রাবাতনাম্পু মন্দির থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
থাইল্যান্ডে ভিক্ষু গ্রেপ্তার
তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মন্দিরে সংগৃহীত বিপুল অনুদান যথাযথভাবে ব্যবহার হয়নি। একই মামলায় পুলিশ ইনফ্লুয়েন্সার সেক্সান সাপসুব্বাসাকুলকেও গ্রেপ্তার করেছে। তিনি মন্দিরের জন্য অনুদান সংগ্রহে সহায়তা করতেন।

মানবিক কাজ থেকে জনপ্রিয়তা
লুয়াং ফোর অ্যালংকট ১৯৯২ সালে মন্দিরে এইচআইভি/এইডস রোগীদের জন্য বিশেষ আশ্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে তিনি দেশজুড়ে একজন মানবিক কর্মী হিসেবে পরিচিতি পান। পরবর্তীতে আশ্রয়কেন্দ্রটি অন্যান্য রোগীদেরও সেবা দেয়। পাশাপাশি রোগীদের সন্তানদের জন্য শিক্ষা কার্যক্রমও চালু করা হয়।
তদন্ত ও অভিযোগ
প্রথমে তদন্ত শুরু হয় ইনফ্লুয়েন্সার সেক্সানের বিরুদ্ধে। পরে তা সম্প্রসারিত হয়ে অ্যালংকটকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, অনুদান অপব্যবহারের অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ার পর তিনি গত সপ্তাহে আবাসিক ভিক্ষুর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর উপকমিশনার জারুনকিয়াত পানকাও বলেন, “গ্রেপ্তারের সময় অ্যালংকট পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন। তিনি স্বেচ্ছায় ভিক্ষুবেশ ত্যাগ করেছেন।” উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডে কোনো ভিক্ষুকে মামলা করার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বেশ ত্যাগ করতে হয়।
ভিক্ষুদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড
থাইল্যান্ডে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা সমাজে অত্যন্ত সম্মানিত। কারণ দেশটির ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নানা অপরাধ ও অনিয়মের কারণে ভিক্ষুদের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত একাধিক ভিক্ষুর বিরুদ্ধে মাদক পাচার, অনুদান আত্মসাৎ এবং ব্রহ্মচর্য ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে গত জুলাইয়ে পুলিশ একটি হটলাইন চালু করে, যেখানে জনগণ অসৎ ভিক্ষুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারেন।
২০১৭ সালে এক বিলাসবহুল জীবনযাপনকারী থাই ভিক্ষু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হন। তার বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ, জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
সারসংক্ষেপ
অ্যালংকটের গ্রেপ্তার থাইল্যান্ডে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাতব্য কাজের নামে সংগৃহীত অর্থ ব্যবহারের স্বচ্ছতা এখন বড় প্রশ্ন। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষ আবারও ভাবছে—কীভাবে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের প্রতি তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।