ঢাকা থেকে, ৬ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৫৩ — দেশের রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন একটি দল আত্মপ্রকাশ করল। দীর্ঘদিন ১২-দলীয় জোটের অংশ থাকা লেবার পার্টি ছেড়ে ‘ইউনাইটেড লিবারেল পার্টি’ (ইউএলপি) নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়েছে। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গতকাল এক ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দলটির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
লেবার পার্টির মহাসচিব আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত এই দলটি ইতোমধ্যে জাতীয় রাজনীতির আলোচনায় কেন্দ্রীয় স্থান দখল করেছে। যদিও জোটের অন্যান্য নেতা দলটির আত্মপ্রকাশকে স্বাগত জানিয়েছেন, তবুও অনেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর এই ধরনের বিভাজনের প্রবণতাকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঐক্যের অভাবকে দেশের সবচেয়ে বড় দুঃখজনক বিষয় আখ্যায়িত করেন। “রাজনীতির মাঠে দলগুলো নানা কারণে একত্রিত থাকতে ব্যর্থ হচ্ছে, যা শুধুমাত্র একটি দলের সমস্যা নয়; আমার নিজের দলও বহু ভাগে বিভক্ত হয়েছে,” উল্লেখ করে তিনি বলেন। তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সময়ে অনেক রাজনৈতিক দল একই নামে হলেও ভিন্ন পরিচয়ে সঞ্চালিত হচ্ছে, যা দেশের জন্য ভালো লক্ষণ নয়।”
তবে তিনি নতুন দলের আত্মপ্রকাশকে কিছুটা ইতিবাচক হিসেবে দেখেন এবং লেবার পার্টির বারবার বিভাজনের ইতিহাস উল্লেখ করে বলেন, “এবার নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করা দৃষ্টিকটু হলেও আশাব্যঞ্জক।”
অন্যদিকে, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২-দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা নতুন দলটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “৫ আগস্টের আগে না এলে এই ধরনের দলের আত্মপ্রকাশের সুযোগ অনেকটাই কমে যেত। আশা করি, ইউএলপি রাজনৈতিক পরিসরে তাদের যথাযথ স্থান ও ভূমিকা প্রতিষ্ঠা করবে।” তিনি দলগত সমাবেশে কিছু নেতাদের পদে বৈষম্যের অভিযোগ তোলেন এবং বলেন, “ফ্যাসিস্টদের অনুরাগী এবং শেখ হাসিনার ছায়ায় থাকা মানুষদের এখানে বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছে।”
ইউএলপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম নিজের বক্তব্যে বলেন, “দীর্ঘদিন ১২-দলীয় জোটের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে, আমার থেকে কোনো অনৈতিক কাজ ঘটবে না। আমি জোটের সিদ্ধান্তের বাইরে যাব না এবং বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখব।”
অনুষ্ঠানে নতুন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়। এতে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হিসেবে মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, সহসভাপতি শওকত হোসেন চৌধুরী, ফেরদৌস, মুফতি আবদুল্লাহ এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আলম সৈকত অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
এছাড়াও, আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ১২-দলীয় জোটের অন্য নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন বক্তব্য উপস্থাপন করেন, যা নতুন রাজনৈতিক দলটির প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রত্যাশা প্রকাশ করে।