যুক্তরাষ্ট্র সরকার এমন একটি নতুন পরীক্ষামূলক কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে, যার অধীনে কিছু পর্যটক ও ব্যবসায়িক ভিসার জন্য ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত বন্ড দিতে হতে পারে। ভিসার মেয়াদ শেষে দেশে না ফেরা ঠেকাতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কর্মসূচিটি ২০ আগস্ট ২০২৫ থেকে শুরু হয়ে প্রায় এক বছর চলবে।
যেসব দেশের নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য হবে বন্ড
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রেজিস্টারে প্রকাশিত নোটিশ অনুযায়ী, যেসব দেশের ভিসাপ্রার্থীদের মধ্যে ভিসা মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র না ছাড়ার হার বেশি, সেসব দেশের জন্য এই বন্ড প্রযোজ্য হবে। এছাড়াও, যেসব দেশের নিরাপত্তা যাচাই এবং স্ক্রিনিং পদ্ধতি অপর্যাপ্ত বা দুর্বল, সেখানকার আবেদনকারীদের ওপরও বন্ড প্রযোজ্য হতে পারে।
কনসুলার অফিসারদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভিসা আবেদনের সময় ৫ হাজার, ১০ হাজার বা সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ডলার বন্ড ধার্য করা হতে পারে। সাধারণত কমপক্ষে ১০ হাজার ডলার বন্ড নেওয়ার নির্দেশনা থাকবে।
যদি সময়মতো যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করা হয়?
যেসব যাত্রী ভিসার শর্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন, তাদের বন্ডের টাকা সম্পূর্ণ ফেরত দেওয়া হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের সময়েও ছিল এমন পরিকল্পনা
এই ধরনের একটি পাইলট প্রোগ্রাম ২০২০ সালের নভেম্বরে ট্রাম্প প্রশাসনের সময়েও চালু করা হয়েছিল। তবে তখন কোভিড-১৯ মহামারির কারণে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ হ্রাস পাওয়ায় তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার মেয়াদে অবৈধ অভিবাসন রোধ ও সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারে গুরুত্ব দেন। তার প্রশাসন থেকে ১৯টি দেশের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছিল।
যেসব দেশ বেশি প্রভাবিত হতে পারে
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, যেসব দেশ—
- ভিসা ওভারস্টের হার বেশি
- নিরাপত্তা যাচাইয়ে দুর্বলতা রয়েছে
- বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়া হয় কিন্তু বসবাসের শর্ত নেই
- রাজনৈতিক বা পররাষ্ট্রনীতির কারণে বিশেষ বিবেচনায়
সেসব দেশকে তালিকাভুক্ত করা হবে। যেমন: চাদ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, মিয়ানমার ও ইয়েমেন সহ আফ্রিকার আরও কয়েকটি দেশ — বুরুন্ডি, জিবুতি, টোগো — ইতোমধ্যেই মার্কিন পরিসংখ্যানে উচ্চ ওভারস্টে হারযুক্ত বলে চিহ্নিত হয়েছে।
আরও নতুন ফি আসছে অক্টোবর থেকে
২০২৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে, যুক্তরাষ্ট্রে আসা সব নন-ইমিগ্রান্ট ভিসাধারীদের জন্য ২৫০ ডলার “ভিসা ইন্টিগ্রিটি ফি” প্রযোজ্য হবে। এই ফি পরবর্তীতে ফেরত দেওয়া হতে পারে যদি ভিসাধারী ব্যক্তি নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী চলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, নতুন বন্ড ও ফি মিলিয়ে ভিসার খরচ এতটাই বেড়ে যাচ্ছে যে, এতে আন্তর্জাতিক পর্যটনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তারা বলছে, এই নিয়ম কার্যকর হলে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ভিসা প্রক্রিয়াগুলোর একটি হয়ে উঠবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ।