বৃহস্পতিবার, আগস্ট ২১, ২০২৫
- বিজ্ঞাপন-
Good News Global
Homeবিশেষ খবরভারত বাংলাদেশের জন্য মেডিক্যাল ভিসার সংখ্যা বৃদ্ধি করল: নতুন নীতি আজ থেকেই...
Ads Space

ভারত বাংলাদেশের জন্য মেডিক্যাল ভিসার সংখ্যা বৃদ্ধি করল: নতুন নীতি আজ থেকেই কার্যকর!!

ঢাকা, ১০ আগস্ট ২০২৫ — সীমান্ত পারাপারের সম্পর্ক জোরদার ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ভারত সরকার বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য মেডিক্যাল ভিসার সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এই নতুন নীতি ঘোষণা করেছে এবং এটি আজ, রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫ থেকে কার্যকর হচ্ছে।

এই সিদ্ধান্তকে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট খাতে উষ্ম অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে, বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা, পর্যটন, আতিথেয়তা, পরিবহন ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশিরা চিকিৎসার জন্য ভারতে যাতায়াতের নিয়মাবলী সহজতর হবে এবং কোভিড-১৯ মহামারী ও পরবর্তী ভিসা নীতির জটিলতার কারণে হ্রাসপ্রাপ্ত ভ্রমণ প্রবাহ ধীরে ধীরে পুনরুজ্জীবিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


মহামারীর আগে ভারত বাংলাদেশিদের জন্য পর্যটন, ব্যবসা ও বিশেষত চিকিৎসার জন্য জনপ্রিয় গন্তব্য ছিল। সরকারি অনুমান অনুযায়ী, বছরে প্রায় ৩.৬ মিলিয়ন বাংলাদেশি এসব উদ্দেশ্যে ভারতে যাতায়াত করত। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই, হায়দ্রাবাদ ও ব্যাঙ্গালোরের মতো শহরগুলো চিকিৎসা, কেনাকাটা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করত।

মেডিক্যাল পর্যটন ছিল এই গতিশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেখানে অনেক বাংলাদেশি ভারতের মানসম্মত এবং সাশ্রয়ী হাসপাতালে বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য যেত। রোগী ও পর্যটকের এই প্রবাহ ভারতীয় অর্থনীতির জন্য হাসপাতাল, হোটেল, পরিবহন, খুচরা ব্যবসা ও মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলোর আয়ের বড় উৎস ছিল।


কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়া এবং ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপের ফলে সীমান্ত পারাপার ব্যাপক হারে কমে গিয়েছিল। আগস্ট ২০২৪-এ ভারতে ভিসা নীতিও কঠোর করা হয়েছিল, যার ফলে বাংলাদেশিদের মেডিক্যাল এবং পর্যটন ভিসা পাওয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে গত এক বছরে ভারত যাওয়া বাংলাদেশিদের সংখ্যা খুব কমে গিয়েছিল।

পর্যটকের এই হ্রাস ভারতীয় বিভিন্ন ব্যবসা ও সেবাখাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। বড় বড় শহরের হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় আয় ও কার্যক্রমে ক্ষতি হয়েছিল। হোটেল শিল্পে বুকিং কমে গিয়েছিল, পরিবহন সেবাগুলো যেমন ট্যাক্সি ও বাসে যাত্রী কমে গিয়েছিল, এবং কলকাতার নিউ মার্কেটের মতো খুচরা ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের লোকসান হয়েছে।

ভ্রমণকারীদের জন্য মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলোও সীমান্ত পারাপারের লেনদেন কমে যাওয়ায় আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল। এই প্রভাব শুধুমাত্র বড় শহরেই নয়, ছোট ছোট শহরেও পড়েছিল, যেখানে ব্যবসা নির্ভরশীল ছিল বাংলাদেশি পর্যটক ও রোগীদের উপর।


ভারত সরকারের মেডিক্যাল ভিসার সংখ্যা বৃদ্ধির এই ঘোষণা ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। কলকাতার নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, বাংলাদেশি গ্রাহকদের আগমন ফিরে আসলে বিক্রি আবার বৃদ্ধি পাবে। চেন্নাই ও দিল্লির হাসপাতালগুলোও আশা করছে বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা বাড়বে, যা তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

হোটেল মালিক, ট্রাভেল এজেন্ট এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতের কর্মীরাও এই নীতির পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন। কাপড়, খাদ্যদ্রব্য ও অন্যান্য পণ্য বিক্রেতারা আশাবাদী যে, পুনরায় ভ্রমণকারীদের আগমন তাদের ব্যবসা পুনরুজ্জীবিত করবে।

এই উন্নয়ন ধীরে ধীরে সাম্প্রতিক ভ্রমণ বিধিনিষেধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনৈতিক সংযোগ পুনর্গঠন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্যবসায় সম্প্রদায় এটিকে সীমান্ত পারাপার বাণিজ্য এবং মানুষ-মানুষের সংযোগ শক্তিশালী করার সুযোগ হিসেবে দেখছে।


অর্থনৈতিক সুবিধার পাশাপাশি এই নীতির পরিবর্তনের বৃহত্তর গুরুত্বও অনেকেই উল্লেখ করেন। রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সীমান্ত ইস্যু কখনো কখনো ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে কঠিন করেছে। তবে ব্যবসায়ী ও সমাজ নেতারা মানবিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার পথে রাজনৈতিক মতানৈক্য বাধা না হয়ে ওঠার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন।

তারা বিশ্বাস করেন, চিকিৎসা ও পর্যটনের জন্য ভ্রমণ বৃদ্ধি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ভাল সম্পর্ক ও পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধির সেতুবন্ধন হতে পারে। মানুষ-মানুষের সংযোগ, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব উন্নয়ন একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।


ভারত সরকারের বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য মেডিক্যাল ভিসার সংখ্যা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত মহামারী ও কঠোর ভিসা নীতির কারণে বিঘ্নিত সীমান্ত পারাপার পুনরুজ্জীবিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ভ্রমণে বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় পর্যটন, চিকিৎসা ভ্রমণ ও বাণিজ্যিক আদান-প্রদানে পুনরায় উত্থান আশা করা হচ্ছে যা উভয় দেশের জন্য লাভজনক।

আজ থেকে কার্যকর হওয়া এই নীতির ফলে কত দ্রুত ভ্রমণকারীর প্রবাহ ফিরে আসে এবং সীমান্তবর্তী স্থানীয় অর্থনীতিতে এর প্রভাব কী হবে তা নজরদারি করা হবে। ভারতীয় ব্যবসা ও বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির নতুন সূচনা হতে পারে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন-
Codesk Ads

Most Popular

- বিজ্ঞাপন-
MK Groceries Ads

Recent Comments

- বিজ্ঞাপন-
Jetsbrick Ads