বৃহস্পতিবার, আগস্ট ২১, ২০২৫
- বিজ্ঞাপন-
Good News Global
Homeজাতীয়বিপিএলে এক ম্যাচ হারতে ৪০০ কোটি টাকার প্রস্তাব, বিসিবির তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য
Ads Space

বিপিএলে এক ম্যাচ হারতে ৪০০ কোটি টাকার প্রস্তাব, বিসিবির তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) স্পট ফিক্সিং তদন্তে উঠে এসেছে ভয়াবহ তথ্য—একটি ম্যাচ হারার জন্য বেটিং সিন্ডিকেটের প্রস্তাব ছিল ৪০০ কোটি টাকা।

বিপিএল স্পট ফিক্সিংয়ে বিসিবির বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) স্পট ফিক্সিং নিয়ে বিসিবির গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এসেছে ভয়াবহ তথ্য। জানা গেছে, সর্বশেষ পাঁচ আসরে অন্তত ১৪০টির বেশি সন্দেহজনক ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে একটি ম্যাচ হারানোর বিনিময়ে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দেওয়া হয়েছিল ৪০০ কোটি টাকার প্রস্তাব।

৩ সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটি

বিসিবি গত ফেব্রুয়ারিতে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করে। কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী ড. খালেদ এইচ চৌধুরী ও সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার শাকিল কাসেম।

তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু সর্বশেষ বিপিএলেই (২০২৪–২৫) সন্দেহজনক ৩৬টি ঘটনার প্রমাণ মেলে। অভিযুক্তদের তালিকায় আছেন ১০–১২ জন ক্রিকেটার, যাঁদের মধ্যে অন্তত ৩–৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ একেবারেই নিশ্চিত। তাঁদের মধ্যে দুজন একসময় জাতীয় দলে খেলা পেসার ও অফ স্পিনারও আছেন।

কে কারা অভিযুক্ত

তদন্তে উঠে এসেছে—

  • বেশিরভাগ অভিযুক্ত ক্রিকেটারের বয়স ৩৫ পার হয়ে গেছে।
  • একজন বর্তমান জাতীয় দলের ক্রিকেটারও আছেন তালিকায়।
  • একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচ এবং বিসিবির সাব-কমিটির এক সদস্যও অভিযুক্ত হয়েছেন।
  • অন্তত তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি (দুর্বার রাজশাহী, সিলেট স্ট্রাইকার্স ও ঢাকা ক্যাপিটালস) সরাসরি ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে কমিটি।

এ ছাড়া সম্প্রচারকারীদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে, কিছু টেলিভিশন চ্যানেল অনলাইন বেটিংয়ের বিজ্ঞাপন প্রচার করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছে, যা পরোক্ষভাবে ফিক্সিংয়ে সহায়তা করেছে।

করপোরেট বক্স থেকে ম্যাচ ফিক্সিং নজরদারি

তদন্তে দেখা গেছে, বিদেশি ও স্থানীয় বেটিং এজেন্টরা অনেক সময় বিসিবির দায়িত্বশীলদের সহায়তায় স্টেডিয়ামের করপোরেট বক্সে বসে খেলা উপভোগ করেছে। এমনকি তাঁদের নিরাপত্তা ও থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

তদন্ত রিপোর্টে কী থাকবে

প্রাথমিক রিপোর্টে আসন্ন বিপিএলকে সামনে রেখে বিসিবিকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হবে। চূড়ান্ত রিপোর্টে সন্দেহভাজন ক্রিকেটার, কোচ, ফ্র্যাঞ্চাইজি ও সম্প্রচারকারীদের নাম বিস্তারিতভাবে উল্লেখ থাকবে।

কমিটির সুপারিশগুলো হলো:

  • সন্দেহভাজন খেলোয়াড় ও ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখা।
  • বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটকে ঢেলে সাজানো।
  • ঘরোয়া সব আসরে দুর্নীতি দমন ইউনিট সক্রিয় রাখা।
  • অনলাইন বেটিং বন্ধে নতুন আইন প্রণয়ন বা বর্তমান আইন যুগোপযোগী করা।
  • অভিযুক্তদের ব্যাংক হিসাবের ফরেনসিক তদন্ত করা।

কেন প্রাথমিক রিপোর্ট আগে

ড. খালেদ এইচ চৌধুরী জানিয়েছেন, “আমরা প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিচ্ছি মূলত আসন্ন বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি বাছাই ও ড্রাফটে বিসিবিকে সতর্ক করার জন্য। চূড়ান্ত রিপোর্টে থাকবে বিস্তারিত প্রমাণ।”

৪০০ কোটি টাকার প্রস্তাবের ঘটনা

তদন্তে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল ১০ম বিপিএলে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দেওয়া ৪০০ কোটি টাকার প্রস্তাব। যদিও ফ্র্যাঞ্চাইজিটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তারা এই তথ্য বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটকে জানায়নি এবং সংশ্লিষ্ট ম্যাচে দলটি হেরে যায়।

উপসংহার

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বিপিএলে এক ম্যাচ হারার জন্য কোটি কোটি টাকার প্রস্তাব প্রমাণ করে কতটা গভীরভাবে বেটিং সিন্ডিকেট ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত। এখন বিসিবির দায়িত্ব কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে দেশের ক্রিকেটকে ফিক্সিংয়ের অভিশাপ থেকে মুক্ত করা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন-
Codesk Ads

Most Popular

- বিজ্ঞাপন-
MK Groceries Ads

Recent Comments

- বিজ্ঞাপন-
Jetsbrick Ads