বৃহস্পতিবার, আগস্ট ২১, ২০২৫
- বিজ্ঞাপন-
Good News Global
Homeব্যবসা ও শিল্পরাশিয়ার তেলের বাজারে আমেরিকার শুল্কবাণ, বিশ্ব অর্থনীতিতে ঝড়ের পূর্বাভাস!!
Ads Space

রাশিয়ার তেলের বাজারে আমেরিকার শুল্কবাণ, বিশ্ব অর্থনীতিতে ঝড়ের পূর্বাভাস!!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারো কঠোর অবস্থানে। দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার মাঝেও রাশিয়া তার বিশাল জ্বালানি সম্পদের জোরে ইউক্রেন যুদ্ধে অব্যাহত রয়েছে। তবে এবার ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি না হলে ৮ আগস্টের মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যকারীদের উপর ১০০ শতাংশ পরোক্ষ শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এই শুল্ক মানে রাশিয়ার পণ্যের আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্র দ্বিগুণ মূল্য পরিশোধ করবে, যা বিশ্ববাজারে তেলের দাম ও জ্বালানি সরবরাহে বড় ধাক্কা দিতে পারে। রাশিয়ার প্রধান রপ্তানি তেল ও গ্যাস, যার বড় ক্রেতা চীন, ভারত, ও তুরস্ক। ট্রাম্প বলছেন, বাণিজ্য ব্যবস্থাকে যুদ্ধ থামানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হবে—যেমন ভেনেজুয়েলাতে হয়েছিল। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই শুল্ক বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানি সংকটের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক রাশিয়া ২০২৫ সালে জ্বালানি রপ্তানি কমাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের বিশ্লেষক কিয়ারান টমকিনস বলেছেন, শুল্ক আরোপে তেলের সরবরাহ সংকুচিত হলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানির দাম বাড়বে। যদিও ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড তেল উৎপাদনের কথা উল্লেখ করেছেন এবং ওপেকের অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতাকেও স্থিতিশীলতার কারণ হিসেবে দেখেন।

রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা এড়াতে মালিকানাবিহীন ট্যাংকারের মাধ্যমে ‘শ্যাডো ফ্লিট’ তৈরি করেছে, যা তেল গোপনীয়তার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ রিচার্ড নেফিউ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সাফল্য নির্ভর করে বাস্তবায়নের ওপর, কারণ নিষেধাজ্ঞার বাইরে যাওয়ার প্রচেষ্টা থাকে সর্বদা।

ভারত, যা রাশিয়ার বড় তেল ক্রেতাদের মধ্যে, এবার ট্রাম্পের শুল্কে জড়াতে পারে। এর ফলে ভারতের আমদানি-রপ্তানি খাতে প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে আমেরিকায় আইফোন রপ্তানি করে যাদের মূল্য দ্বিগুণ হতে পারে। ভারত এই পদক্ষেপকে দ্বিমুখী নীতি হিসেবে দেখছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র এখনো রাশিয়া থেকে পারমাণবিক জ্বালানি আমদানি করে।

চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উত্তেজনাপূর্ণ হবে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে ভারতের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি পণ্য আমদানি করে। এই শুল্ক প্রয়োগে ট্রাম্প-চীন বাণিজ্য আলোচনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

ইউরোপও প্রভাবিত হবে, কারণ তারা এখনও রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি করে। ইইউ কমিশন ২০২৭ সালের মধ্যে রাশিয়ার জ্বালানি আমদানির সম্পূর্ণ অবসান চায়, কিন্তু ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে ইউরোপীয় বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ও সরবরাহ সংকট দেখা দিতে পারে।

অর্থনৈতিক দিক থেকে, রাশিয়ার প্রবৃদ্ধি ২০২৪ সালে ৪.৩ শতাংশ হলেও, IMF-এর পূর্বাভাস ২০২৫ সালে তা মাত্র ০.৯ শতাংশে সীমাবদ্ধ থাকবে। যুদ্ধের প্রকৃত প্রভাব বোঝা কঠিন কারণ মস্কো অনেক তথ্য গোপন করছে।

ট্রাম্পের নতুন শুল্ক মূলত রাশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবাহে ধাক্কা দিয়ে ইউক্রেনকে সহায়তা করা এবং যুদ্ধ বন্ধের উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে। এর প্রভাব শুধু রাশিয়া নয়, পুরো বিশ্ব অর্থনীতিতেও উল্লেখযোগ্য সঙ্কট ডেকে আনতে পারে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপন-
Codesk Ads

Most Popular

- বিজ্ঞাপন-
MK Groceries Ads

Recent Comments

- বিজ্ঞাপন-
Jetsbrick Ads